গেম ডেভেলপমেন্ট কি? কিভাবে গেম তৈরি করা হয়? বিস্তারিত জানুন

আমাদের অনেকের মনেই এই প্রশ্নটা অবশ্যই আসে যে আসলে কিভাবে গেম তৈরি করা হয়। গেম খেলা যতটা সহজ এবং যতটা মজার অবশ্যই গেম তৈরি করা ততটাই ইজি নয়। আপনারা অনেকেই হয়ত খুজে থাকেন যে, মোবাইল দিয়ে গেম তৈরি করা যায় কিনা বা এপস তৈরি করে ইনকাম করার উপায় কি? তবে আজকে আমরা মোবাইল দিয়ে সফটওয়্যার তৈরি করার বিষয় নিয়ে আলোচনা কর না। আমরা আলোচনা করব কিছু অ্যাডভান্স গেম ডেভেলপমেন্ট নিয়ে। চলুন শুরু করি।

তবে আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে খুবই ইজি এবং ইন্টারেস্টিং ভাবে তুলে ধরব যে কিভাবে গেম তৈরি করা হয় তার বেসিক স্টেপ গুলো। তাই অবশ্যই মজা হবে ,যে কেউ বুঝতে পারবেন এমনকি অন্যান্য পোষ্টের মতো অসাধারণ কিছু তো জানতে পারবেনই। পাশাপাশি যারা ফিউচারে গেম ডেভলপার হবার কথা ভাবছেন, তারা অবশ্যই এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। প্রথমেই আপনাদের একটা জিনিস ক্লিয়ার করে দেই আমরা কোন ধরনের গেমের ব্যাপারে কথা বলতে যাচ্ছি।

অবশ্যই পাজেল গেম বা ছোটখাটো গেম নিয়ে নয়, বরং কথা বলতে যাচ্ছি বড় ধরনের এডভান্স গেম গুলো নিয়ে। চলুন নিচে থেকে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক আজকে আমরা কি ধরনের গেম নিয়ে কথা বলবো এবং তা কিভাবে তৈরি হয়, সেই ব্যাপারে।

Unity - Game Development Terms
  • পাবজি মোবাইল
  • কল অব ডিউটি 
  • জিটিএ ৫
  • ফোড়জা 

উপরের লিস্টে থাকা গেম গুলো কিভাবে তৈরি হয় এদের মেকিং প্রসেস নিয়েই মূলত আমরা কথা বলবো আজকের আর্টিকেলে। আপনারা অবশ্যই জানেন এগুলো তৈরি করা এতটাও সহজ নয়, একজনের জন্য তো কোন ভাবেই নয়।প্রয়োজনে একাধিক বা বেশ কিছু মানুষের একটা টিম, যেখানে একেকজনের অথবা ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের ভিন্ন ভিন্ন স্টেপে হিসেবে কাজ হবে।

ভিডিও গেম তৈরীর ক্ষেত্রে বেশ কিছু স্টেপ এবং প্রসেসের মধ্যে দিয়ে প্রতিটি গেম সম্পন্ন হয়। আর এগুলো আপনাদের বোঝানোর জন্য আমি খুবই ঘাটাঘাটি আর রিসার্চ এর মাধ্যমে ৭ টি স্টেপে ভাগ করেছি।  যার মাধ্যমে আপনারা কিভাবে গেম তৈরি করা হয় তার সম্পূর্ণ প্রসেসটি জানতে পারবেন।  এখন এগুলো আমি step-by-step আপনাদের এক্সপ্লেইন করবো। চলুন শুরু করা যাক।

কিভাবে একটি গেম তৈরি করা যায় স্টেপ বাই স্টেপ জেনে নিই চলুন।

১. স্টেপ:-

একটা ইন্টারেস্টিং ভিডিও গেমের জন্য সর্বপ্রথম কি প্রয়োজন? একটা সুন্দর স্টোরি রাইট? যা ধাপে ধাপে গেমটির মধ্যে এক্সাইটমেন্ট ধরে রাখবে। তো প্রথমত ভিডিও গেম রাইটার এর মাধ্যমে একটি স্টরি তৈরি করা হয়। রাইটার স্ক্রিপ্ট তৈরি করে ক্যারেক্টারগুলোর ডায়লগ তৈরি করে, যার ফলে খাতা-কলমে গেমটির সম্পূর্ণ একটি স্টরি তৈরি হয়ে যায়। অবশ্যই বেশ কয়েকবার যাচাই-বাছাই করা হয় এবং স্ক্রিপ্টগুলো মডিফাইড করা হয়।

আরও পড়ুন –

২. স্টেপ:-

তো স্টোরি সম্পূর্ণভাবে রেডি হয়ে গেলে সেকেন্ড স্টেপে কাজ করে কনসেপ্ট আর্টিস্ট, সেই স্কেচ এর মাধ্যমে গেমটির এসিড তৈরি করে।অর্থাৎ স্টোরি অনুযায়ী গেমটির এনভারমেন্ট কেমন হবে, ক্যারেক্টারগুলো দেখতে কেমন হবে, মেন ক্যারেক্টার ভিলেন সহ অন্যান্য খুঁটিনাটি সমস্ত কিছু স্কেচ এর মাধ্যমে সাধারণ পর্যায়ে একটি রূপ প্রদান করে। বাট আর্টিস্ট এর কাজ কি এখানেই শেষ? উত্তর জেনে নিব থার্ড স্টেপে।

৩. স্টেপ:- 

থার্ড স্টেপে মূলত এইগুলো নিয়ে কাজ করবে টুডি এবং থ্রিডি আর্টিস্ট। তারা অ্যাসিডস গুলোকে কালার করবে এগুলো থ্রিডি তে রূপান্তর করবে। অর্থাৎ এখন অ্যাসিডস গুলোতে গ্রাফিক্যাল কাজগুলো হবে। অ্যাসিডস-গুলো তাদের নিজ নিজ ফাইনাল রূপে রূপান্তরিত হবে। হিস্টোরি রেডি অ্যাসিডস গুলোও অল মোস্ট রেডি এখন কি গেম ডেভেলপমেন্ট এর কাজ হবে? একদমই না।  এখনো বেশ কিছু কাজ বাকি, ইন্টারেস্টিং সমস্ত কিছু তো এখন শুরু হবে।

৪. স্টেপ:-

ফোর্থ স্টেপ এগুলো দিয়ে দিচ্ছি অ্যানিমেশন আর্টিস্টের কাছে, এখন ফাইনালি অ্যাসিডস গুলো জীবন্ত করে তোলা হবে। আই মিন এগুলো অ্যানিমেশনে রূপান্তর করা হবে। মোশন গ্রাফিক্স এর মত কাজগুলো এখানে করা হবে, যতটা সহজে সবকিছু বলে ফেলা যাচ্ছে একচুয়ালি এগুলো খুবই কষ্টসাধ্য কাজ। ইস্মুত এবং কোয়ালিটিফুল রেজাল্টের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই এখানে অ্যাক্টরস দের ও ব্যাপক পরিশ্রম করতে হয়।

ফাইনালি সকল প্রকার ডিজাইন গ্রাফিক্স ডিজাইন এমনকি মোশন গ্রাফিক্স এর মাধ্যমেও সম্পূর্ণভাবে হাজারো অ্যাসিডস তৈরি হয়ে গেল। কিন্তু এখন তো এগুলো গ্রামে প্রবেশ করাতে হবে তাইনা? কিন্তু কিভাবে?এখন সমস্ত কাজ হবে গেম ইঞ্জিনের আদলে। গেম ইঞ্জিন হলো সেই সফটওয়্যার, যার মাধ্যমে গেমের সেই ভার্চুয়াল জগত সৃষ্টি করা হয়। অর্থাৎ গেম তৈরি করা হয়।

এখন গেম ইঞ্জিন হাজারও অ্যাসিডস ব্যবহার করে গেম ইঞ্জিনের মাধ্যমে গেমটির এনভারমেন্ট লেভেলস সহ সমস্ত কিছু সংস্থা গঠন করবে। অর্থাৎ কাঙ্ক্ষিত সেই গেম ওয়ার্ল্ড তৈরি করবে।

এখানেই শেষ নয় , এবার বাকি কাজগুলো গেম ডেভলপার ওদের হাতে।

Eight Milestones in Video Game Development from 2000 to Today

৫. স্টেপ:-

ডেভলপাররা হাজারো কোডিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে গেমের লজিক্যাল কাজগুলো করবে। গেমটির ফিজিকস সিস্টেম, ম্যাথমেটিক্যাল ক্যালকুলেশন সহ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স তৈরি এবং সেটাপের কাজগুলো তাদের হাতে।

ব্যাপারটা অনেকে হয়তো বুঝতে পারেননি তাই একটু সহজ ভাবে নিচে এক্সপ্লেন করছি।

  • একটা গেমে ক্যারেক্টারগুলো কিভাবে কন্ট্রোল হবে?
  • কিভাবে ফাইট করবে?
  • ফাইটের সময় কখন কেমন ড্যামেজ হবে? 
  • কখন হেলথ কমবে?

এছাড়া রেসিং গেম এর ক্ষেত্রে গাড়িগুলোর স্পিড সমস্ত কিছুর গ্রাভিটি কন্ট্রোল এর মত সকল প্রকার ম্যাথমেটিক্যাল লজিক্যাল এবং ফিজিক্সের ব্যাপারগুলোর ডেভলপাররা করবে।

৬. স্টেপ:-

এন্ড মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট পার্ট আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অর্থাৎ এআই তৈরি করা সেটআপ করাও ডেভলপারদের হাতে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সদের কাজ হবে মূলত গেমে মেন ক্যারেক্টার যে আমরা কন্ট্রোল করব এটা বাদে বাকি সমস্ত কিছু কন্ট্রোল করা।

এনিমি কিভাবে অ্যাটাক করবে, অন্যান্য ক্যারেক্টারগুলো কখন কিভাবে আমাদের সাথে ইন কারেক্ট করবে এই ব্যপারগুলো কন্ট্রোল করা। অনেক কিছুই তো হয়ে গেল এখন কি গেম তৈরি করা শেষ? না এখনো কিছু বাকি আছে সমস্ত এখনো সাউন্ড করা হয়নি।

৭. স্টেপ:-

এবার অডিও ইঞ্জিনিয়াররা সমস্ত কিছু রিয়ালিস্টিক এবং অ্যাট্রেক্টিভ করে তোলার জন্য গেমটিতে বিভিন্ন মিউজিক এড করবে সাউন্ড ইফেক্ট এড করবে। ব্যাস গেম কি মোটামুটি তৈরি করা শেষ, এবার গেমটি টেস্টিংয়ের পালা। গেম টেস্টিং গ্রুপ গেমটি প্লে করবে এ সমস্ত কিছুই নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।

যদি কোন বাগ থাকে তাহলে সেগুলো ফিক্স করা হবে এবং ফাইনালে সবকিছু ঠিক থাকলে গেমটি আমাদের হাতে পৌঁছে যাবে। কি ? ব্যাপার গুলো খুবই কমপ্লেক্স তাইতো? যতই কমপ্লেক্স হোক আমি শিওর পোস্টটি আপনারা ভালভাবেই ইনজয় করেছেন।

বর্তমান সময়ে এসে ফ্রি ফায়ার এবং পাবজি গেমস খেলেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই যারা পাবজি ইউ সি কিংবা ফ্রী ফায়ার এর ডায়মন্ড ক্রয় করতে চান। তারা নিচের ওয়েবসাইট থেকে ক্রয় করতে পারেন।

তো পাঠক: আমাদের আজকের এই আর্টিকেল পড়ে আশা করছি আপনি এটা বুঝতে পারছেন যে কিভাবে গেম তৈরি করা হয়।

 যদি বুঝতে কোথাও অসুবিধা হয় তাহলে কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। পোস্টটি উপকারী মনে হলে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন, আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি ধন্যবাদ।