হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী প্রোটিন পেতে হলে খাবারের উৎসে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে।
বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ, কর্মশক্তির ভারসাম্য এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রোটিন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট’। পাশাপাশি পেশির ক্ষয়পূরণ, নতুন পেশি গঠন এবং তাকে শক্তিশালী করার জন্যও প্রোটিন আবশ্যক। তাই এই পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত মাত্রায় গ্রহণ করতে হবে নিয়মিত।
যুক্তরাষ্টভিত্তিক পুষ্টিবিদ ট্রিস্টা বেস্ট ওয়েলঅ্যান্ডগুড ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেন, “প্রোটিনের অভাব থাকলে, শরীর তখন জ্বালানি উৎস হিসেবে পেশি ও অ্যামিনো অ্যাসিড ব্যবহার করা শুরু করবে। ফলে পেশির ঘনত্ব ও শক্তি কমতে থাকবে সময়ে সঙ্গে। এরমধ্যে হৃদযন্ত্রের পেশি থাকতে পারে, যে কারণে হৃদযন্ত্র ক্রমেই দুর্বল হতে থাকবে।”
হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী প্রোটিন বেছে নেওয়ার উপায়
কোনো খাবারের পুষ্টিগুণ একাধিক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যে খাবারটি আপনি খাচ্ছেন তা কতটুকু হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী, তাতে থাকা প্রোটিনের কার্যকারিতা কম হবে না বেশি সেটাও ওই বিষয়গুলোর ওপর নির্ভরশীল থাকবে।
যেমন, একটি স্বাস্থ্যকর প্রোটিনের উৎসের কার্যকারিতা সেই খাবার কীভাবে রান্না করা হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে কম কিংবা বেড়ে যেতে পারে। আবার সেই খাবারে আরও কী যোগ করা হচ্ছে এবং কতটুকু আসলে খাওয়া হচ্ছে সেটার ওপরও নির্ভর করবে কতটুকু প্রোটিন তা থেকে পাওয়া যাবে এবং তার মান কেমন হবে।
হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী প্রোটিন পেতে হলে উৎসে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে।
গরুর মাংসের বদলে টফু
বেস্ট বলেন, “গরুর মাংসের যে টুকরাগুলোতে চর্বির মাত্রা বেশি সেগুলো হৃদযন্ত্রের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। এই ‘স্যাচুরেইটেড ফ্যাট’ বাড়াবে ‘ট্রাইগ্লিসেরাইড’ ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (এলডিএল), কমাবে উপকারী কোলেস্টেরল (এইচডিএল)’য়ের মাত্রা।”
এক্ষেত্রে গরুর মাংস বা যে কোনো লাল মাংসের বদলে যোগ করতে পারেন টফু। এটি একটি উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎস, যাতে ‘স্যাচুরেইটেড ফ্যাট’ কম। পাশাপাশি টফু শরীরের হাড়, পেশি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য উপকারী। ডিমের বদলেও টফু খাওয়া যায়। এতে আরও আছে আয়রন ও ভিটামিন ডি।”
তিনি আরও বলেন, “শক্ত ধরনের টফু বেছে নিতে হবে, সঙ্গে মেশাতে হবে সবুজ শাকসবজি। যেমন- পালংশাক, ব্রকলি, ব্রাসেলস স্প্রাউটস, গাজর, আলু ইত্যাদি। লবণ ও চিনি যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করাই ভালো।”
গরুর মাংসের বদলে স্যামন
স্যামন মাছ প্রোটিনের একটি দারুণ উৎস যা প্রদাহরোধী। কারণ এতে থাকে হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী চর্বি। আরও আছে ‘ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড’ যা প্রদাহের মাত্রা ও বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায়।
‘স্যাচুরেইটেড ফ্যাট’ যা হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর তার বদলে আপনার প্রোটিনের উৎসে যদি ‘ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড’ থাকে যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী তবে তা নিঃসন্দেহে উপকারী। স্যামনে আরও মেলে ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি সিক্স ও ভিটামিন বি টুয়েলভ। ভিটামিন ডি খুব কম ভোজ্য উৎস থেকেই পাওয়া যায়।”
মুরগির বদলে টুনা মাছ
টুনা মাছেও প্রচুর পরিমাণে ‘ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড’ পাওয়া যায়। মুরগির মাংসের অনেক পদেই বিকল্প হিসেবে টুনা মাছ ব্যবহার করা যেতে পারে অনায়াসে।
টুনাতেও ‘বি ভিটামিনস’ আর ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। তাই মুরগির মাংসের বদলে টুনা মাছ ব্যবহার করলে নিঃসন্দেহে পুষ্টিগুণের দিক থেকে অনেক বেশি উপকারিতা পাওয়া যাবে।
১ রিভিউ