কনটেন্ট মার্কেটিং (Content Marketing) বলতে কী বোঝায়?? এবং এর গুরুত্ব ও সুবিধাগুলো জেনে নিন

বর্তমানের ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেটের গুরুত্ব অনেক বেশি। এছাড়া ব্যাবসা ও বানিজ্য ক্ষেত্রেও ইন্টারনেট অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। কারণ ইন্টারনেটের মাধ্যমে কম সময়ে ও সহজেই যেকোনো পণ্য কেনাবেচা করা যায়।

কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসা প্রসারের জন্য এবং কম খরচে মার্কেটিং এর জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং কে বেছে নেয়। আর এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশ হলো কনটেন্ট মার্কেটিং (Content Marketing)।

• কনটেন্ট মার্কেটিং কি?
কনটেন্ট হল এমন এক বিষয় যেটা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত করা হয় (যেমন: স্পিচ, রাইটিং, ভিডিও, গ্রাফিক্স ইত্যাদি)।

কনটেন্ট মার্কেটিংয়ে মূলত, ব্যবসার সাথে সম্পর্কযুক্ত বিষয় নিয়ে আকর্ষণীয়ভাবে স্পিচ/ রাইটিং/ ভিডিও/ গ্রাফিক্স ইত্যাদি তৈরি করা হয়। এবং সেই স্পিচ/ রাইটিং/ ভিডিও/ গ্রাফিক্স গুলো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন মেডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া ও অন্যান্য মাধ্যমগুলোতে প্রচার করা হয়। এতে করে শ্রোতারা সেই কনটেন্ট গুলো দেখে বিভিন্ন পণ্য কিনে এবং কম্পানি লাভবান হয়।

কনটেন্ট মার্কেটিং এর মূল উদ্দেশ্যই হলো শ্রোতা গ্রাহকদের পণ্যের প্রতি আকর্ষণ করা। আমরা সবাই ফেসবুক ব্যবহার করি, ফেসবুকে স্ক্রল করার সময় যে বিভিন্ন ভিডিও টাইপের এডভেটাইজ দেখতে পাই, সেগুলো ও কিন্তু কনটেন্ট মার্কেটিং এর একটি অংশ।

কনটেন্ট মার্কেটিং এর বিভিন্ন অংশ রয়েছে, চলুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেই…

• ইনফোগ্রাফিক্স (Infographics):
ইনফোগ্রাফিক্স মূলত কোন একটি গ্রাফিক্স বা ইমেজ এর মধ্যে বিভিন্ন টেক্সট বা লেখা যুক্ত করে পণ্যের এডভেটাইস করা। যেটা আমরা ফেসবুকে স্ক্রল করার সময় দেখতে পাই এবং গুগলের এডভেটাইজে ও দেখতে পাই।

• ভিডিও (Video):
কনটেন্ট মার্কেটিং এর সবচেয়ে সফল মার্কেটিং সিস্টেম হচ্ছে ভিডিও মার্কেটিং। এই ধরনের মার্কেটিং এ কোন একটি পণ্যের আলাদা একটি ভিডিও তৈরি করা হয়, এবং সেটা বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে করে গ্রাহক ওই পণ্য সম্পর্কে ভালভাবে ডিটেলস জানতে পারবে, এবং সেই পণ্যটা কিনবে।

• টেক্সট এবং আর্টিকেল (Text And Articles):
টেক্সট এবং আর্টিকেল সিস্টেমে, কোন একটি পণ্যের বিষয়ে বিস্তারিত লেখা হয়। এবং সেই লেখাটা সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন মেডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া ও অন্যান্য মাধ্যমগুলোতে প্রচার করা হয়।

যাদের এই পণ্যটি কেনার ইচ্ছা থাকে, তারা অবশ্যই সেই আর্টিকেলটি পড়বে। এতে করে কোম্পানির পণ্যের বিক্রি বেড়ে যাবে।

• পডকাস্টিং (Podcasting):
পডকাস্টিং এ মূলত কোন একটি পণ্যের বিভিন্ন তথ্য অডিও আকারে রেকর্ড করা হয় এবং সেই রেকর্ডিং ইন্টারনেটের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

কোন শ্রোতা সেই পণ্যের রেকর্ডিং শুনে সেই পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে, এবং কোম্পানির পণ্য ও বিক্রি হবে।

• ওয়েব পেজ (Web Page):
ওয়েব পেজ হল কনটেন্ট মার্কেটিং এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই মার্কেটিং এ, কোন কোম্পানি তাদের নিজেদের পণ্যের জন্য আলাদা একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে।

এই ওয়েবসাইটে ওই কোম্পানির সকল পণ্যের তথ্য সাজানো থাকে। যাতে কোন ভিজিটর তাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার সাথে সাথে তাদের পণ্য সম্পর্কে ভালোভাবে বিস্তারিত জানতে পারে।

• কনটেন্ট মার্কেটিং এর সুবিধা:
১. আপনার গ্রাহকদের সাথে অনলাইনে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবেন। এতে করে তাদের চাহিদা সর্ম্পকে সহজেই জানা যাবে।

২. সঠিকভাবে কনটেন্ট মার্কেটিং করতে জানলে আপনার পণ্য খুব কম সময়ে বেশি বিক্রি হবে।

৩. কনটেন্ট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনার গ্রাহকদেরকে আপনি কোন কিছু সহজেই বুঝতে পারবেন।

৪. ভাল কনটেন্ট তৈরি করলে আপনার গ্রাহকদের সাথে ভাল সম্পর্ক তৈরী হবে।

৫. কম খরচে মার্কেটিং করতে পারবেন।

৬. আপনার কনটেন্ট যদি মানসম্মত তৈরি করেন সেক্ষেত্রে আপনার গ্রাহকদেরকে বারবার বোঝাতে হবেনা।

৭. কনটেন্ট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি আপনার পণ্য সম্পর্কে মানুষকে সহজে বুঝাতে পারবেন।

• কনটেন্ট মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা:
আগের মার্কেটিং এর তুলনায় কন্টাক্ট মার্কেটিং এ তুলনামূলক খরচ কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা বেশি লাভ করতে পারে। এছাড়া কনটেন্ট মার্কেটিং এর ফলে কোন একটি পণ্যের বিস্তারিত আলোচনা বারবার না করে, একটি টেক্সট বা ভিডিওর মাধ্যমেই করা যায়।

এতে করে সময় নষ্ট হয় না। এছাড়া ডিজিটাল মিডিয়া গুলো তাদের অ্যালগরিদম এর মাধ্যমে, আপনার কনটেন্টকে সঠিক গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে পারে। যার ফলে আপনার পণ্য বেশি বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে।

সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।